মরসুমের প্রথম রুপোলি শস্য বাঙালির ইলিশ এলো ঘরে

এবছর ভোজনরসিক বাঙালির পাতে ইলিশের দেখা মেলা শুধু আর কিছুদিন অপেক্ষা।দীঘা মোহনায় মোট ৮০ টন সামুদ্রিক মাছ ধরা পড়েছে । ইলিশ ,পমফ্রেট , ভোলা ,চিংড়ি।

এবছর ঝির ঝিরে বৃষ্টি শুরু হয়েছে , তারসাথে ইলিশ ধরার ব্যান পিরিয়ড উঠে গেছে । গত ১৫ জুনে ট্রলার নিয়ে মৎস্যজীবীরা বেরিয়ে পড়েছেন সমুদ্রে। যতগুলি ট্রলার ফেরত এসেছে তাতে এই মুহূর্তে ২০০ কেজি ইলিশ এবং সব মাছ নিয়ে ৮০ টন সামুদ্রিক মাছ পাওয়া গেছে ।

২ কুইন্টাল ইলিশ চাহিদা অনুযায়ী পরিমাণে খুব কম হলেও এদিন বাজার দর ছিল ১২০০-১৫০০ টাকা ১ কেজি ওজনের ইলিশের, এর চেয়ে ছোট মাছ মিলেছে ৫০০/৬০০ টাকায় কেজি প্রতি। মধ্যবিত্ত বাঙালির এখন হয়তো কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে নতুন মরসুমের ইলিশ খাওয়ার জন্যে। আরো মাছের যোগান আসলে দাম কমবে বলে আশা করা এমনটাই ধারণা মৎস্যজীবীদের।


মৎস্যজীবীদের থেকে জানা গেছে গতবার লকডাউন এবং ব্যান পিরিয়ড থাকলেও সেভাবে ইলিশের দেখা পাওয়া যায়নি , কারণ ইলিশ মূলত দেখাযায় আবহাওয়ার উপর ভিত্তি করে , জিরঝিরে বৃষ্টি এবং বাতাস বইতে শুরু করলে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ চলে আসে বঙ্গোপসাগরে মোহনার কাছে মিষ্টি জলে ডিম পাড়তে । গত বছর অনুকূল পরিবেশ ছিল না তাই সেভাবে ইলিশের ঝাঁক আসেনি। তবে এই বছর শুরু থেকেই অনুকূল পরিবেশ হওয়ায় ইলিশ মাছ ধরা দিয়েছে মৎস্যজীবীদের জালে।


দীঘা ফিশারম্যান এবং ফিশ অ্যাসোসিয়েশনের তরফ থেকে জানা গেছে মোট 3600 টি ট্রলার মধ্যে 2500 ট্রলার মাছ ধরার জন্য ইতিমধ্যে সমুদ্র পাড়ি দিয়েছে তার মধ্যে পঞ্চাশটির মতো ট্রলার মাছ নিয়ে ফিরে এসেছে এখন বাকি ট্রলার গুলো ধীরে ধীরে মাছ নিয়ে ফিরে আসবে। এসোসিয়েশন এর সম্পাদক শ্যামসুন্দর দাস বলেন প্রথম দিন বাজারে পঁয়ত্রিশটি আরতে মাছের নিলাম হয়েছে শুরুতে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি মেঘলা আকাশ সহ ইলিশের অনুকূল পরিবেশ রয়েছে পূবালী বাতাস বইতে শুরু করলে ভালো পরিমাণ ইলিশ ধরা পড়বে বলে আশা করা যায়।

প্রতিবছরই চোখে পড়ে প্রমাণ সাইজের থেকে ছোট সাইজের ইলিশ মৎস্যজীবীদের জালে ধরা পড়ছে কিন্তু এর থেকে বাঁচার উপায় কি মৎস দপ্তর থেকে জানা গেছে ছোট পাশের জাল যাতে মাঝিরা এবং মৎস্যজীবীরা ব্যবহার করতে না পারেন তার জন্য অনেক সময়ই মৎস্য দপ্তর থেকে সারপ্রাইজ ভিজিট করা হচ্ছে এবং যাতে তারা এই ছোট মাছ না ধরে তার জন্য তাদের বোঝানো হয় সময় সময়।


মৎস্য দপ্তর এবং মোহনার এলাকাবাসী থেকে জানা যায় জুন থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত ইলিশ মাছ মিষ্টি জলে ডিম পাড়তে ঝাকে ঝাকে চলে আসে সেই সময়ে অনেক পরিমানে ইলিশ ধরা পড়ে মৎস্যজীবির জালে।


যেহেতু এই দুই থেকে তিন মাসই ইলিশ মাছ ধরা হয় বাকি সময়টা তে মানে বছরের বাকি সময়ে ইলিশ সংরক্ষণ করা একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় কারণ ইলিশ মাছ আমাদের বাঙ্গালীদের কাছে একটি অতি লোভনীয় এবং সুস্বাদু মাছ। এই মাছের সাথে জড়িয়ে রয়েছে অনেক রকম নস্টালজিয়া। এবছর ইয়াস ঝড়ের জন্য বেশ কয়েকটি বরফ কল জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। সমুদ্রের জল ঢুকে বরফ কল গুলির অবস্থা শোচনীয়, বরফের ইলিশ মাছ সংরক্ষণের জন্য একটি অতি প্রয়োজনীয় সামগ্রী। ইলিশ মাছকে সারাবছর খাওয়ার জন্য উপযুক্ত রাখতে বরফ একটি অপরিহার্য বস্তু এই বরফ এই বছর কিভাবে পাওয়া যাবে এবং তার যোগান ইবা কি রকম হবে তা নিয়ে যথেষ্ট চিন্তার কারণ রয়েছে, এটাই বলছেন মৎস্যজীবী এবং মৎস্য ব্যবসায়ীরা।

Madhyamik & HS result updates

Leave a Comment